স্বদেশ ডেস্ক:
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভুল চিকিৎসায় চার বছর বয়সী এক শিশুকন্যার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে শ্যামলীপাড়ার জননী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ক্লিনকের মালিকপক্ষ পলাতক রয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে শিশুটির দাফন শেষে পরিবারের লোকজন ক্লিনিক ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত শিশুর মা সুমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়ে সুমনার পিঠে ফোঁড়া ওঠায় গত সোমবার রাত ৮টার দিকে আমার ভাইকে নিয়ে ফোঁড়া অপারেশনের জন্য স্থানীয় জননী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক আহসানুল হকের কাছে যাই। সেখানে চিকিৎসক আমার মেয়েকে দেখে রক্ত পরীক্ষাসহ নানা ধরনের পরীক্ষা করতে দেন। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক আহসানুল হক সুমনার পিঠে পরপর পাঁচটি ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। এ সময় আমার মেয়ে চিৎকার করে বলে, “মা আমি আর বাঁচব না।” তারপরই আমার মেয়ের খিঁচুনি শুরু হয় এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।’
সুমনার মামা মুনিয়া মিয়া বলেন, ‘আমার ভাগ্নিকে নিয়ে যখন ক্লিনিকে গেলাম, তখন চিকিৎসক তাকে দেখে অপারেশনের কথা জানান এবং কিছু ওষুধ আনতে বলেন। এরপর সুমনাকে জোর করে পরপর পাঁচটা ইনজেকশন প্রয়োগ করে বলেন, “একটু ঠান্ডা হলে নিয়ে আসবেন, ফোঁড়া কেটে বের করে দেওয়া হবে। এরপর সুমনার খিঁচুনি শুরু হয়। তখন অক্সিজেন দেওয়ার জন্য তাকে একটা রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বলেন, সুমনার অপারেশনের জন্য আপনাদের একটা সই লাগবে। ডাক্তার এই কথা বলে আমাদের কাছ থেকে জোর করে সই নিয়ে নেন। পরে আমাদের আর রুমের ভেতরে ঢুকতে দেননি। আমরা এই চিকিৎসকের শাস্তি চাই।’
এ বিষয়ে জননী ক্লিনিকের মালিক মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘ব্যাথানাশক ইনজেকশন দেওয়ার পর রোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ডা. রোগী অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত শিশুর পরিবারের লোক এসে আমার ক্লিনিক ভাঙচুর করে। তবে আমরা পালাইনি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আহসানুল হকের সঙ্গে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, এ ঘটনায় নিহত শিশুর মা সুমা খাতুন বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।